মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুর্গাপুরে খামারের পাহারাদারকে হত্যা করে গরু লুটের ঘটনায় আরও ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার।  নেত্রকোনা ৪নং সিংহের বাংলা ইউনিয়নে বিজিএফ এর চাল বিতরণ শুরু  কেন্দুয়ায় খালের পাড় থেকে ব্যবসায়ীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার  আটপাড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিহত-১ আহত ৪ নেত্রকোনায় সচেতন যুব ও ছাত্র সমাজের উদ্যোগে মেডিকেল কলেজ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন  নেত্রকোনায় মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন  নেত্রকোনায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে কথিত মানবসেবক ও কবিরাজ গ্রেফতার উৎসবমুখর পরিবেশে নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত  খালিয়াজুরীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘ*র্ষ ধনু নদী থেকে ৩ জনের লা*শ উ*দ্ধার।  নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিল

মোহনগঞ্জে মাদক ও -দেহ ব্যবসার আস্তানা গুড়িয়ে দিল গ্রামবাসী

ডেইলি নেত্র নিউজ ডেক্স :
  • আপডেট : শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩
  • ৪৩৯ পঠিত

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বিরামপুর গ্রামের ভেতর পুকুর পাড়ে ছোট ঘর বানিয়ে সেখানে মাদক ও দেহ ব্যবসা শুরু করেন সোহেল মিয়া উপজেল বিরামপুর গ্রামের হাজী আ. হাই ওরফে লাল মিয়ার ছেলে।

এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে গ্রামবাসী বেশ কয়েকবার সালিশ-বৈঠক করে তাকে এসব বন্ধ করতে বললেও সোহেল কারো কথায় পাত্তা দেননি। শেষে তাকে আস্তানা গুটিয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করতে সময়সীমা বেঁধে দেন গ্রামের লোকজন। তাতেও কাজ না হওয়ায় সোহেলের মাদক ও দেহ ব্যবসার আস্তানা ভেঙে দেয় গ্রামবাসী।

পুলিশের খাতায় সোহলে একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার নামে থানায় অন্তত ১৫টির বেশি মাদকের মামলা রয়েছে। এসব মামালায় অসংখ্যবার গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। সোহেলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারও তার সাথে মাদক ব্যবসায় যুক্ত। নাসরিনের নামেও একাধিক মামলা রয়েছে।
শনিবার দুপুরে বিরামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের ভেতর পুুকুর পাড়ে থাকা সোহেলের টিনের ঘরটি বেড়া বিহীন দাড়িয়ে রয়েছে। বেড়া ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে চাউনির টিন ও পিলার অক্ষত রয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানান, গত বুধবার দুপুরে গ্রামবাসী মিলে সোহেলের ঘরটি ভেঙে ফেলেছে। সোহেল এক যুগের বেশি সময় ধরে গ্রামে মাদকের ব্যবসা করে। গ্রেপ্তার হয়েছে অসংখ্যবার। এখন বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে টিনের ঘর বেধে এটাকে মাদক ও দেহ ব্যবসার আস্তানা বানিয়েছে। তার স্ত্রী-কন্যাকেও এ কাজে জড়িত করেছে। দিন-রাত বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিচিত লোকজন আসে। গ্রামের সামাজিক পরিবেশ তার কারণে নষ্ট। এ নিয়ে দুই-তিন গ্রামের মানুষ তার প্রতি ক্ষিপ্ত। কয়েক দফা এ নিয়ে সালিশ করে তাকে এসব বন্ধ করতে বলেছে। বারবার বললেও কারো কথা শুনেনি সোহেল। তাই গ্রামবাসী মিলে তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের আস্তানা ভেঙে ফেলেছে।

সোহেলের বড় ভাই নুর জামাল বলেন, সোহেল এই ঘরটিকে মাদক ও দেহ ব্যবসার আস্তানা বানিয়ে ফেলেছে। তার এসব অনৈতিক কর্মের কারণে বাইরে কোথাও আমারা মুখ দেখাতে পারি না। আত্মীয়-স্বজনরা তার জন্য লজ্জায় পড়তে হয়। সোহেলকে প্রথমে এসব বন্ধ করার জন্য সময়-সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শোনেনি। আমিসহ আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের লোকজন মিয়ে তার ঘর অপকর্মের ঘরটি ভাঙা হয়েছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ চৌধুরী বলেন, মাদক-দেহ ব্যবসা শুরু করে গ্রামের মান সম্মান শেষ করে দিয়েছে সোহেল। গ্রামে চুরি ও মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। সম্মান নিয়ে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। তাই গ্রামের মানুষ মিলেই তার আস্তানা ভেঙেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলি নুর মিয়া বলেন, সোহেলের কর্মকান্ডে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ। গ্রামের বাড়িতে মাদক ও দেহ ব্যবসার মতো কাজ চিন্তাও করা যায় না। আর এসব নিজের ঘরে শুরু করেছে সোহেল। গ্রামের মানুষ তাদের মান সম্মান নিয়ে বসবাস দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। কোন ভাবেই তাকে থামানো যাচ্ছিল না। পরে গ্রামবাসী তার আস্তানা ভেঙেছে।

শনিবার বিকেলে উপজেলার বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোতাহার চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগেও ৩ গ্রামের হাজারো মানুষ সোহেলের এসব অপকর্মের বিষয়ে সালিশ করেছে। অনৈতিক কাজ বন্ধ না করলে তাকে গ্রাম থেকে চলে যেতে বলেছেন সবাই। কিন্তু সে কোন কথা শোনায় সোহেলে দুইভাই ও আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামের লোকজন মিলে তার অনৈতিক কাজের আস্তানাটা ভেঙেছে। সোহেলের কারণে গ্রামে মদকসেবী ও চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছিল। সোহেলকে আইনের আওতায় এনে কঠোর সাজার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

শনিবার বিকেলে অভিযুক্ত মো. সোহেল মিয়া জানান, মাদক-দেহ ব্যবসার অভিযোগ মিথ্যা। গ্রামের কয়েকজন বখাটে আমার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিল। এর প্রতিবাদ করায় তারা ষড়যন্ত্র করে আমার ঘর ভেঙেছে। আমি অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী আমার বিচার হবে। ঘর ভাঙবে এটা তো হতে পারে না। তারা ঘরের মালামাল লুটপাট করেছে। আমি এ ঘটনায় আদালতে মামলা করবো। এক সময় আমি মাদক সেবন করতাম এখন আর করি না।

সোহলের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার ছেলে গাঁজা খায় এটা ঠিক। তবে অন্য কিছু করে না। তবে লোকজন ঘরের জিনিসপত্র লুটপাট করেছে।

সোহেলের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী গাঁজা খায়। দেহ ব্যবসার অভিযোগ সঠিক না। আমাদেরকে সময় দিলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতাম। আমার ঘর ভেঙে স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুটপাট করেছে। এলাকার কয়েকজন বখাটে আমাকে কু-প্রস্তাব দিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঘর ভেঙে নাটক করছে। গ্রমাবাসী মিলে নয় ওই বখাটেরা যারা কু-প্রস্তাব দিয়েছিল তারাই ঘর ভেঙেছে। গ্রামবাসীকে আমি কোন দোষ দেই না।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘর ভাঙার খবর পেয়ে একজন অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে সোহেল চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদকের অসংখ্য মামলা রয়েছে। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও মনে হয় মামলা আছে। কিছুদিন আগেও তাকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 Daily Netrakona News