রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মদনে যৌথ অভিযানে দেশীয় অস্ত্র-ইবাসহ মাদক কারবারি আটক  নেত্রকোনা পৌরসভার বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার-মির্জা সায়েম মাহমুদ নেত্রকোনায় নবযোগদানকৃত জেলা প্রশাসক এর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা নেত্রকোনার নতুন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের যোগদান নেত্রকোনার পৌর সাবেক মেয়রের ০৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করায় নেত্রকোনার খালিয়াজুরী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন দৈনিক ফলাফল পত্রিকার উপ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন শাহবাজ জামান নেত্রকোনার সাবেক মেয়র ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আটক  কলমাকান্দায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২৭৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ  নেত্রকোনায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় ভারতীয় চিনিভর্তি ট্রাক জব্দ 

আমরা চাই আমাদের অধিকার, চাই নিরাপদ পানির নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা

দৈনিক নেত্র নিউজ ডেক্স :
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০২৩
  • ৮০ পঠিত

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তে রয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট, প্রতি বছর সারা বিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব পানি দিবস, বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। জীবন থেকে যদি বিশুদ্ধ পানি উঠিয়ে দেওয়া হয় তবে মানবজীবন সঙ্গে সঙ্গে হুমকির মুখে পড়বে। যেখানে পানি ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনা করা যায় না, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের শরীরের ৭০ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত, সেখানে পানিদূষণকে যে কোনো মহামারি থেকে কম নয় বললে ভুল হবে না। পৃথিবী খুব শিগিগর বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণতার দিক থেকে অগ্রগামী। আমাদের নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থেই আমাদেরকে পানি নিয়ে ভাবতে হবে, পানিদূষণ রোধে এগিয়ে আসতে হবে সব পর্যায় থেকে।

এশিয়ান ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট আউটলুক শীর্ষক কয়েক বছর আগে করা প্রতিবেদন বলে যে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে নদীর পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। অতিমাত্রায় দূষণের কারণ হিসেবে পরিশোধন ছাড়াই পয়োবর্জ্য পানিতে ফেলা, এর ফলে নদীগুলোতে রাসায়নিক পদার্থের দূষণ ব্যাপক আকার রূপ ধারণ করেছে। আবার সেচকাজে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬ষ্ঠ, ভারতের অবস্থান প্রথমে। এডিবির মতে ভূগর্ভের পানির এই অতিরিক্ত ব্যবহার বা নির্ভরশীলতা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। আর অতিমাত্রায় বিদ্যুত্চালিত সেচযন্ত্র ও গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলনে দেশের উত্তরবঙ্গ নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় পানির স্তর বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছে যাচ্ছে। গৃহস্থালি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সর্বদিক বিবেচনায় পানির এক বিরাট সংকট সামনে অপেক্ষা করছে বিশ্ববাসীর জন্য। জাতিসংঘ এবং পরিবেশবিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হিসেবে নিরাপদ পানির কথা উল্লেখ করে সবাইকে সচেতন করে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দূষিত নদীগুলোর মধ্যে সর্বজনবিদিত হচ্ছে ঢাকার বুড়িগঙ্গা। বুড়িগঙ্গার পাশাপাশি রয়েছে নেত্রকোনার মগড়া,ও সীমান্তবর্তী ধলাই নদীর পানি এতটাই দূষিত হয়ে পড়েছে যে, সেখানকার বেশির ভাগ স্থানে মাছের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন। শীত মৌসুমে পানির রং এবং গন্ধে সেখানকার এলাকা বিষিয়ে ওঠে তখন এই নদীগুলোকে বড় আকারের নর্দমা কিংবা ড্রেন বললে মোটেও ভুল হবে না। এভাবে পানির গুরুত্বপূর্ণ সব উত্স একে একে দূষণের কবলে পড়ে জীবজগত্ ধ্বংস করে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সমীক্ষা-২০১৭ অনুযায়ী প্রতি এক টন কাপড় উত্পাদনে নদীতে নিক্ষিপ্ত বর্জ্যের পরিমাণ ২০০ টন। হাজারের কাছাকাছি তৈরি পোশাকশিল্পের ওয়াশিং ও ডাইং কারখানার অবস্থান ঢাকা শহরে। ইস্পাত কারখানাগুলো থেকে বছরে ১ লাখ কোটি লিটার এবং কাগজ কারখানাগুলো থেকে ৪৫ হাজার কোটি লিটারের বেশি দূষিত বর্জ্য পানিতে মেশে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাচ্ছে। এছাড়া জমিতে সার-কীটনাশক প্রয়োগ, নৌযান চলাচলসংক্রান্ত দূষণতো আছেই।

পানিসম্পদ দূষণের সঙ্গে জড়িত বড় কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কলকারখানা এবং ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কৃষি ও কলকারখানা অর্থনীতিতে কী পরিমাণ অবদান রাখছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের বড় দুইটি খাত তৈরি পোশাক ও কৃষির চাকা সচল রাখতে আমরাই আবার পানির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান দূষিত করে ফেলছি। তাই পানি দূষণ রোধে জনসাধারণের সচেতনতা থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কলকারখানা মালিক এবং দেশের নীতিনির্ধারকদের সচেতনতা, কেননা তারাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে এক্ষেত্রে।

পরিবেশের এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের প্রতি খেয়াল রেখে নতুন উদ্যোক্তাদের কাজ করতে হবে এবং বর্তমানদেরও বিকল্প চিন্তা করা আবশ্যক। নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থেই নিজেদেরই কাজ করা উচিত। খাবার ছাড়া আমরা বেশ কয়েকদিন বাঁচতে পারলেও বিশুদ্ধ পানি ছাড়া কিন্তু বাঁচতে পারব না। আমাদের শরীরের দুই-তৃতীয়াংশ হচ্ছে পানি। আর এজন্যই বলা হয় পানির অপর নাম জীবন। আমাদের সুস্থ থাকতে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। সারাদিন আমরা নানা ধরনের খাবার খাই আর এই খাবারগুলোর মধ্যে একমাত্র পানি চর্বি, শর্করা ও চিনিমুক্ত। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর ঠিকভাবে কর্মসম্পাদনের জন্য প্রয়োজন পানি।

আমরা তো প্রতিনিয়তই পানি পান করছি; কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখছি- এই পানি পানের জন্য কতটা নিরাপদ? তীব্র গরমে কাজের ফাঁকে হয়তো নীল জার থেকেই পানি পান করলেন; কিন্তু সে পানি কি আমাদের শরীরের জন্য নিরাপদ, জ্যামে আটকে পড়েছেন, এ সময় দেখলেন নামকরা কোনো প্রতিষ্ঠানের মোড়কে বোতলজাত ঠাণ্ডা পানি বিক্রি হচ্ছে। এমন পানি অনেকেই নিশ্চিন্তে পান করছেন; যার ফলে বেড়ে যাচ্ছে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি। ডায়রিয়া, কলেরা ও আমাশয়সহ আরও অনেক জটিল ও কঠিন রোগের কারণ হতে পারে এই দূষিত পানি।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, দূষিত পানি
দীর্ঘদিন ধরে পান করলে হতে পারে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি।বাসাবাড়িতে নিজেদের টিউবওয়েল, ফিল্টার কিংবা ব্যক্তিগত পাম্পের পানি কিছুটা বিশুদ্ধ হলেও বাইরে পানি পান করার সময় আমাদের হতে হবে সচেতন। বাইরের বিভিন্ন দোকানপাট, হোটেল কিংবা রাস্তার ভ্রাম্যমাণ পানি যদি হয় অনিরাপদ; তবে তা আমাদের জন্য হতে পারে চরম বিপর্যয়ের কারণ। জননিরাপত্তার কথা ভেবে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা। একইসঙ্গে সচেতন হতে হবে আমাদেরও। তাই আমাদের জীবন বাঁচাতে চাই। নিরাপদ পানি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 Daily Netrakona News