সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন

কেন্দুয়ায় পাটের ফলন বাম্পার: ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষক

আসাদুল করিম মামুন কেন্দুয়া প্রতিনিধি :
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৯৫ পঠিত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এবার আগাম বৃষ্টি না হওয়ায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সোনালি আঁশ পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। যার ফলে ক্রমেই পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আপাতত খুশি। তবে ভাল ফলনে দাম নিয়ে হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় কৃষকরা।

উপজেলায় ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে পাট কাটার কাজ শেষ করেছে। এরই মধ্যে মুক্ত জলাশয়ে জাঁক দেয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর ও শুকানো কাজ শেষ করে বিক্রির চিন্তা করছেন। কিন্তু দাম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। সরকারি ও বেসরকারি পাটকল গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ও হতাশায় পড়েছেন সাধারণ কৃষকেরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়: কয়েক বছর আগেও চাষিরা পাট চাষ করে লোকসানে পড়েছিলেন তাই অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়েন। মাঝে স্বল্প পরিসরে যারা আবাদ ধরে রেখেছিলেন, তারাই লাভবান হয়েছেন।

তাদের দেখেই অন্যরা আবারো পাট চাষে ফিরেছেন। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমের শুরুতেই চাষিরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। এতে পাটের আবাদ বেড়েছে অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু এ বছর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে উপজেলার পূর্বরায় গ্রামের পাট চাষি মোঃ ওয়াসকরুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবার আমার জমির
৫০শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছি।

ইসলাম উদ্দিন নামে আরেক পাটচাষি বলেন: গত বছর দুই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে কিছুটা লাভ করতে পেরে এবার আবাদ বাড়িয়েছি। কিন্তু এখন দেখছি আগের থেকে ১ হাজার টাকা কমে গেছে পাটের দাম। পাটের উৎপদন খরচ আর বদলি খরচ বাবদ ৫০০ টাকা খরচসহ বর্তমানে যে পাটের বাজার মূল্য তাতে লোকশানের মুখে পড়তে হবে। সরকার যদি পাটের দাম না বাড়ায় তাহলে আমাদের পাটের আবাদ থেকে সরে আসতে হবে। সরকারের উচিত পাটের মূল্যা বাড়ানো।

পাটের ফলন ভাল হওয়ায় এলাকার মৌসুমি শ্রমিকদের ব্যস্ততা ও বেড়েছে এক আঁটি জাঁক দেওয়া পাট থেকে আঁশ ছাড়িয়ে ২০টাকা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে দিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা টাকার মতো আয় হয় তাদের।

এদিকে পাইকাররা বলছেন: মিল মালিকেরা পাটের সঠিক দাম না দেয়ার পাশাপাশি গত বছরের বকেয়া বিল থাকায় কৃষকদের কাছ থেকে কম মূল্যে পাট ক্রয় করতে হচ্ছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়: উপজেলায় গত বছর প্রতি মণ পাট ২হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও বর্তমানে তা ১হাজার টাকা কমে ২হাজারের নিচে নেমে এসেছে। এদিকে চলতি মৌসুমে উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫৮০হেক্টর জমিতে ধরা হয়েছে। আবাদ ও হয়েছে ৫৮০হেক্টর জমিতে।

কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন এবার আশানুরূপ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রথম দিকে পাটের দাম কিছুটা কম থাকে। কৃষকরা এখন যে পাটের দামটা কিছুটা কম পাচ্ছে কৃষকরা যদি তাদের উৎপাদিত পাট কিছুদিন মজুদ রাখতে পারে, তাহলে আশা করি দেড় মাস কিংবা দু’মাসের মধ্যে দামটা আরো বাড়বে। তখন কৃষকরা ভালো দাম পাবেন।কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন : চলতি বছরে উপজেলায় ৫৮০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। এবার প্রতি হেক্টর জমিতে ১.৬ মেট্রিকটন ফলন হয়েছে।

এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে আশাকরি পাটের যে সোনালী দিন ছিলো সেটা আমরা খুব কম সময়ের মধ্যেই ফিরে যেতে পারবো। এ উপজেলায় পাট উৎপাদন ভালো হওয়ায় চাষিদের নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এবার আশা করছি ন্যায্য দাম পেলে কৃষক লাভবান হবেন। সে ক্ষেত্রে সামনের বছরে আরো দ্বিগুণ জমিতে পাট উৎপাদনে ঝুঁকবে কৃষকরা।পাটের লক্ষ্যমাত্রাও দ্বিগুন অর্জন হবে পাশাপাশি পাটের উৎপাদনও বাড়বে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 Daily Netrakona News