নেত্রকোণা সদরের মদনপুর ইউনিয়নের মনাং গ্রামের সাজিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়েটির সৎ মা গত ২৬/০৫/২০২৩ ইং তারিখে নেত্রকোণা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এবং তার পিতা মালয়েশিয়া প্রবাসী, আসামী মোঃ ফজলে রাব্বী একই গ্রামের বাসিন্দা এবং মেয়েটির পিতার প্রতিবেশী সূত্রে ভাতিজা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে : আসামী মোঃ ফজলে রাব্বী প্রায় কিছুদিন যাবৎ ঐ কিশোরীকে একা পাইয়া পছন্দ করে বলিয়া প্রকাশ করত ও বিবাহের প্রলোভন দেখাইয়া কুপ্রস্তাব দিয়া আসিলে আসামীর এহেন প্রস্তাব মেয়েটি প্রত্যাখ্যান করিয়া তার সৎ মাকে জানায়।
মেয়েটির সৎ মা বিষয়টি মোবাইলে তার প্রবাসী স্বামীকে জানিয়ে নিজে এবং লোক দ্বারা আসামীকে ইতিপূর্বে সতর্ক করে। ইহার পরেও আসামী মেয়েটিকে পূর্বের ন্যায় কুপ্রস্তাব দিয়া আসিতে থাকে।গত ১৭/০৫/২০২৩ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ২ ঘটিকার সময় মেয়েটির মা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করার জন্য বৈখুরহাটি বাজারে চলিয়া গেলে আসামী মোঃ ফজলে রাব্বী বিকাল আনুমানিক ৩·৩০ ঘটিকার সময় বসত ঘরে কৌশলে প্রবেশ করিয়া মেয়েটিকে একা পাইয়া দরজা আটকাইয়া জোরপূর্বক ধর্ষণ করিয়া চলিয়া যায়।
এদিকে মেয়েটির মা ঘরে এসে দেখে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে, তখন তিনি চিৎকার শুরু করলে চিৎকার শুনে প্রতিবেশী হিসেবে আসামীর স্ত্রী, মা ও চাচী বসত ঘরে প্রবেশ করেন এবং মেয়েটিকে সকলে মিলে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে কর্তব্যরত চিকিৎসক চিকিৎসা প্রদান করার পরেও জ্ঞান না ফিরলে তাহাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকগণ তাহাকে চিকিৎসা প্রদান করাকালীন গত ১৭/০৫/২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ১০·০০ ঘটিকার সময় তাহার জ্ঞান ফিরে, সেখানে মেয়েটির সৎ মা ছাড়াও আসামী ও আসামীর পরিবারের কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
মেয়েটি একটু সুস্থ বোধ করলে সেখান থেকে তারা ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত হাসপাতালের ছাড়পত্র গ্রহণ না করিয়া শম্ভুগঞ্জে আসামীর এক ফুফুর বাসায় নিয়ে যায় এবং পরে মেয়েটি সুস্থ বোধ করলে তারা নিজেদের বাড়িতে চলে আসে, মেয়েটির সৎ মা বিষয়টি তার প্রবাসী স্বামীকে জানালে স্বামীর পরামর্শে এবং স্হানীয় গন্যমান্য লোকজন ও আত্মীয়স্বজনের পরামর্শে ঘটনার কয়েকদিন পরে গত ২৬/০৫/২০২৩ ইং তারিখে মেয়েটির সৎ মা নেত্রকোণা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তবে সরেজমিনে ঐ এলাকায় গিয়ে আসামীর আত্মীয়স্বজন ও কয়েকজন প্রতিবেশির কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন এলাকার কিছু কুচক্রী মহল মেয়ের পক্ষে দরবার করে ছেলের কাছ থেকে চাপ দিয়ে অর্থ আদায় করে ভাগ বাটোয়ারা করতে চেয়েছিল, কিন্তু আসামীর লোকজন রাজী না হওয়াতে মামলাটি করা হয়েছে।
তাছাড়া মেয়ে এবং তার সৎ মাসহ আত্মীয়স্বজনদের সাথে কথা বলে কথার ভিন্নতা পাওয়া গেছে। কেউ বলছে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, কেউ বলছে ধর্ষণে করেছে। মেয়েও প্রথমে বলেছে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পরে আবার বলেছে ধর্ষণ করা হয়েছে।এছাড়া ঘটনার বর্ণনায়ও অমিল পাওয়া গেছে।
এই বিষয়ে নেত্রকোণা মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে, মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে এই মামলাটি সুষ্ঠু ও সঠিক তদন্ত করে আসল সত্য উন্মোচন করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানায়।
Leave a Reply