নেত্রকোনা জেলা জুড়ে চলছে অসহনীয় গরম আর লোডশেডিং অতিষ্ঠ জনজীবন হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা সেই সাথে চৈত্রের দাবদাহের মতো জৈষ্ঠরও এমন আবহাওয়ার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন।
এতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজন বাড়ছে রোগ বালাই। জ্বর-সর্দি,কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোরসহ বৃদ্ধরা সবার মুখে একটি প্রার্থনা বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির জন্য। এতে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে,এই পরিস্থিতি থাকবে আরও কয়েকদিন।
গরমের সাথে প্রতিযোগিতা করে বেড়েছে লোডশেডিং,গত কয়েক দিন ধরে চলা প্রচন্ড গরমে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। ঘরে-বাইরে, দিনে-রাতে সমানতালে গরম। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
কয়েকদিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে যে স্মরণকালের এমন গরমে মানুষসহ হাঁসফাঁস করছে পশু-পাখিও। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই।জনজীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। তীব্র গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন আরও বিপাকে। বিদ্যুত চলে গেলে আরও দূর্বিসহ হয়ে উঠে জীবনযাত্রা।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় : গত কয়েকদিন ধরেই গরমের মাত্রা বেশি। প্রতিদিন থেকে গরমের মাত্রা আরও বেড়েছে। গরমে মনে হয় যেন শরীর পুড়ে যাচ্ছে। অস্থির লাগে। এদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জেলায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণও বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে রাতে দুই-তিন বার বিদ্যুত চলে যাচ্ছে। সারাদিনেও নিয়ম করে কয়েকবার বিদ্যুত থাকছে না। তবে মধ্য রাতে বিদ্যুত চলে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। নির্ঘুম জেগে থাকতে হয়। শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তি হয় সবচেয়ে বেশি।
বশির মিয়া নামের এক রিকশাচালক বলেন, বিকেল থেকে প্রচুর গরম। কোথাও একটু বাতাস নেই। আজ যাত্রীও কম। এ গরমে গাড়ি থামিয়ে বসে থাকাই দায়। বার বার পানি, স্যালাইন খাচ্ছি।
কামাল খান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বাজারে এসে এক দোকানে গিয়ে ফ্যানের নিচে বসে আছি। খুবই অসুস্থ লাগছে গরমে। ফ্যানের বাতাসও গরম।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন : চলতি সপ্তাহে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে। বৃহত্তর সিলেটে তীব্র গরমে নানা রোগের প্রাদুরভাব দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে জ্বর,মাথাব্যথা ও পেটের পীড়নে ভুগছে মানুষ। বৃষ্টিহীন সিলেটে মানুষ হা-পিত্যেস করছে কয়েকদিন থেকে। বৃষ্টির জন্য চাতকের মত আকাশ পানে এখন চেয়ে আছেন ভাটির বাসিন্দারা। যেখানে এই মৌসুমে বানের পানি নিয়ে সামাল সামাল রব উঠার কথা সেখানে এবার অবাক হওয়ার মত পানি শূন্যতা।
নেত্রকোনা প্রত্যেক উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তীব্র গরমে ও পানিবাহিত জীবাণুর সংক্রমণে পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, জন্ডিস, পানি শুন্যতা রোগী বেড়েছে । এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে গ্রামের অধিকাংশ লোকজন ভীড় করছেন স্থানীয় ঔষধের দোকান ও হাসপাতালে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশী ভাগই শিশু। প্রতিদিনই নানা উপসর্গ নিয়ে রোগীরা যাচ্ছেন উপজেলার সরকারী হাসপাতালে। এরমধ্যে কাউকে দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক চিকিৎসা, আবার কোন রোগীর অবস্থা জটিল হলে ভর্তি করা হচ্ছে।
জেলার অধিকাংশ গ্রামে পানিবাহিত জীবাণুর সংক্রমণে পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, জন্ডিস, পানিশুন্যতা ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে যে পরিমাণ রোগী ভর্তি হয়েছেন, এরমধ্যে বেশীর ভাগ রোগী ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত।
এদিকে চলছে গ্রীষ্মকাল। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড গরমে চারদিক অস্থির। সেই সাথে রয়েছে আর্দ্রতা। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত। বাড়ছে গরমের স্বাস্থ্য-সমস্যা, রোগ-জ্বরা। ঘামাচি কিংবা পানিস্বল্পতার মতো সমস্যা প্রায় প্রত্যেকেরই হচ্ছে, আবার কেউ কেউ হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে।
Leave a Reply