দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কমিউনিটি ক্লিনিক। এলাকাবাসীও জানে না এখানে কোনো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় বা এখানে কেউ দায়িত্বরত আছে। সাইনবোর্ড অথবা ক্লিনিকের নাম লেখা থাকলেও নেই কোনো চিকিৎসা সেবা। দিনের পর দিন তালাবদ্ধই পড়ে থাকে এই গুরুত্বপূর্ণ ভবনটি।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সমাজ সহিলদেও ইউনিয়নের কমলপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের চিত্র এটি, মঙ্গলবার (৬ জুন) সরেজমিনে গিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদা খাতুন গিয়ে এই কমিউনিটি ক্লিনিকটি বন্ধ পান। হাওরবেষ্টিত এ এলাকায় এভাবেই সেবাহীন কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এভাবে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। অথচ কাগজে-কলমে এখানে তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পদে আল মুলকী রয়েছে।
স্বাস্হ্য সেবা সূত্রে জানা গেছে : সিএইচসিপি মূলত ক্লিনিকটির সার্বিক দেখাশোনা করেন। স্বাস্থ্য সহকারী শিশুদের বিভিন্ন টিকা দানসহ অন্যান্য কার্যক্রম করেন। এছাড়া পরিবারকল্যাণ সহকারীর কাজ গর্ভবতীদের কাউন্সেলিং, বিভিন্ন ওষুধ বিতরণ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা। অথচ তারা মাসে এক দিন ক্লিনিকই খোলেন না।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৬ জুন) মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা খাতুন কমিউনিটি ক্লিনিকটি পরিদর্শনে গিয়ে এটি বন্ধ পান। তালা খুলে ভেতরে ঢুকে ময়লা দুর্গন্ধ দেখতে পান। এ সময় অনেক দিন ধরে ক্লিনিকটি খোলা হয়নি বলে তথ্য পান। এছাড়া হাজিরা খাতায় দীর্ঘদিন কারও স্বাক্ষরও পাননি। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কলমপুর বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এ গ্রামের মানুষ চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে পারে না। হাওরপাড়ের মানুষের চিকিৎসার জন্য এ কমিউনিটি ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ক্লিনিকটি কাউকে কোনোদিন খুলতেই দেখি না। সাধারণ মানুষ জানেই না এখানে ওষুধ দেওয়া বা চিকিৎসা হয়। তাই কেউ এখন আর এ ক্লিনিকে আসে না।
এ বিষয়ে কথা বলতে সিএইচসিপি আল মুলকীকে বারবার তার মুঠো ফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা খাতুন বলেন, আমি মঙ্গলবার (৬ জুন) সরেজমিনে গিয়ে ক্লিনিকটি বন্ধ পাই। এমনকি দীর্ঘদিন না খোলার বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply