নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় অত্যাধিক গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গরমের কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা ও হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র গরমে খুবই খারাপ অবস্থা বিভিন্ন পেশার মানুষের। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘাম ঝরিয়ে ছুটতে হচ্ছে তাদের।
কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে রাজমিস্ত্রী বাবুল মিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গরম কেমন পড়ছে, তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। এটা তো ধনী-গরিবের জন্য আলাদা হয় না। তারপরও যাদের এসি আছে তারা শান্তিতে থাকতে পারে, আর আমাদের মতো গরিবের এই গরমের মধ্যেই কষ্ট করেও কাজ করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, গরমে শুধু যে কষ্ট হচ্ছে তা নয়, আয়-রোজগারও কমেছে। একদিকে গরমের কারণে বেশিক্ষন কাজ করতে পারছি না বলে তিনি জানান।
বাসস্ট্যান্ড মডেল স্কুল সংলগ্ন ফল ব্যবসায়ী স্বপন ইসলাম বলেন, কষ্টের তো শেষ নেই। কিন্তু পেট চালাতে হলে রোদ হোক বা বৃষ্টি, গরম হোক বা শীত, আমাদেরকে ব্যবসা নিয়ে বসতে হয়।
বেসরকারি চাকরিজীবী কোয়ালিটি লারনার্স স্কুলের শিক্ষক সৈয়দা সুমা আক্তার বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা অত্যাধিক গরমে ক্লাস করতে পারছে না। পাশাপাশি বিদ্যুৎের লোডশেডিং এর কারণেও ক্লাসে যারা আসে তাদের অত্যাধিক গরমে অনেক কষ্ট হচ্ছে এবং শিক্ষার্থী উপস্থিতি প্রায় অর্ধেক কমে গেছে বলে তিনি জানান।
২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. জিয়াউর রহমান জীবন জানান, আজকে আমার বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে এসেছিলাম। ক্লাসে অত্যাধিক গরম অনুভূত হচ্ছে পাশাপাশি বাইরেও গরমের জন্য এক ঘণ্টাও থাকা যায় না। বাসায়ও গরমে নাজেহাল অবস্থা। মাথার উপর ফ্যান ঘোরে, কিন্তু সেই বাতাসও গরম। দিনের বেলা ট্যাপ থেকে যেন ফুটন্ত পানি বের হয়। একটু বৃষ্টি যে কবে নামবে সেই অপেক্ষায় আছি।
নেত্রকোনা আবহাওয়া অফিসের সূত্র জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিন দিন আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.শরীফুজ্জামান জানান: গরমের কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার জরুরি বিভাগ থেকে ৩৩ জনকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। গরমে মূলত ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে প্রেসারের রোগীদেরও সমস্যা দেখা দেয়। তাই তিনি ফ্রিজে রাখা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাবার না খাওয়ার জন্য সকলকে পরামর্শ দেন এবং বেশি করে বিশুদ্ধ পানি ও ফলমূল খেতে বলেন।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি কেন্দুয়া এরিয়া অফিসের ডিজিএম মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, অত্যাধিক তাপমাত্রা কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝে লোডশেডিং মাধ্যমে বিদ্যুত সরবরাহ করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রাজিব হোসেন বলেন, দুদিন ধরে তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি। তাই গরমও বেড়েছে। এতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষেরই দৈনন্দিন কাজকর্মেও ব্যাঘাত ঘটছে।
Leave a Reply