গ্রাম্য মাতব্বররা শালিশি বৈঠকে ‘একঘরে’ ঘোষণা দিত বড় অপরাধের শাস্তি হিসেবে সে পরিবারের সঙ্গে অন্যদের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ, গ্রামের কোন দোকান থেকে ঐ পরিবার কিছু কিনতে পারবে না, বাজারে কিছু বিক্রিও করতে পারবে না।
অনেকটা ভাতে-পানিতে মরার দশা। একঘরে শাস্তি পাওয়া অনেক পরিবারই গ্রাম ছেড়ে চলে যেত।
উন্নত বিশ্বের মোড়লদের স্যাংশনের সঙ্গে আমাদের গেঁয়ো সর্দারদের সমাজ থেকে নির্বাসিত করা একঘরের গভীর যোগসূত্র রয়েছে।
আমাদের সামাজিক বলয়ে মাতব্বরদের প্রভাব ও দাপট কমেছে, রক্ষণশীলতার নামে গোঁড়ামী বন্ধ হয়েছে। একান্নবর্তী পরিবার না থাকায় সামাজিকতা উঠে গেছে, শহুরে জীবনে পুলিশ ছাড়া কারও খবর কেউ রাখে না।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পুরো পৃথিবীকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে। সেই গ্রামের নিয়ন্ত্রণ এখন গোষ্ঠীপতিদের হাতে। হাতে রাখা সুইচে তারা সব কিছু পরিচালনা করে। তাদের পছন্দের বাইরে গেলে ‘সামাজিকতা’র দোহায় দিয়ে অবাধ্যদের একঘরে করার ঘোষণা দেয়। তারপরও সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখতে সবাই তা মানতে বাধ্য। এখন বিশ্বগ্রাম থেকে কারও বের হওয়ার সুযোগ নেই।
সভ্যতার শুরুতেই জবাবদিহিতা ও সমাজে প্রচলিত প্রথার প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। অমান্যে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। বেহুদ্দো কাজের খেসারত গুষ্টিশুদ্ধ দিতে হয়, পরিবারের একজন অপরাধে জড়ালে সবাইকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।
সামাজিক নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা বিধিব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা জরুরি। গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার বিশ্বজুড়ে প্রাণ ফিরে পাক, স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞার বদলে আমরা একে অন্যের বন্ধু হয়ে বাঁচি
Leave a Reply