নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরে আন্তঃসীমান্ত সোমেশ্বরী নদী। ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সর্পিলাকৃতির এই নদীটির ওপর নির্মিত সেতুটি নিয়মবহির্ভূত বালু উত্তোলনের কারণে এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি ব্যবস্থাপনা আইন না মেনে বালু উত্তোলন করায় সেতুর পিলারের নিচ থেকে সরে যাচ্ছে মাটি। ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছেন স্থানীয়রা।
সোমেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটিই মূলত নেত্রকোণা জেলা সদরের সাথে বিরিশিরি, দূর্গাপুরসহ আশপাশের মানুষের যোগাযোগের স্বস্তিদায়ক উপায়। অথচ বালুখেকোদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে পড়েছে পুরো স্থাপনাটি।
সোমেশ্বরী নদীতে রয়েছে মোট পাঁচটি বালু মহাল। সেখান থেকে নিয়ম মেনে চলার চেয়ে, নিয়ম না মেনেই বালু তোলার প্রবণতা বেশি। সেতুর কয়েকশো গজের মধ্যে বালু উত্তোলন করায়, পিলারের তলা থেকে সরে যাচ্ছে মাটি। সতর্ক করা হলেও শুধু মাত্র লাভের আশায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীরা। হুমকির মুখে পড়া সেতুর সংস্কার ও নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর।
নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি পরিবহনের ক্ষেত্রেও রয়েছে অনিয়ম। ধারণক্ষমতার বেশি পরিবহনের কারণে কয়েকমাস আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুর ওপরিভাগে। পরে মেরামতও করা হয়। সেতুটিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে নিয়ম মেনে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের আহ্বান জানিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও রাজিব উল আহসান বলেন, সেতুর নিচ থেকে কোনো মতেই বালু উত্তোলন করা ঠিক নয়, সেতুর নিচ থেকে কমপক্ষে ১ কেলোমিটার দূরে বালু উত্তোলন করতে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে আমি ইজারাদারদের সাথে কথা বলেছি। বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
নেত্রকোণা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান বলেন, সেতুর ১ কিলোমিটার দূর থেকে বালু উত্তোলন করতে হবে। না হলে সেতুর নিচ থেকে বালু সরে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে।
এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন যানবাহনের পাশাপাশি দুই হাজারেরও বেশি বালুবাহী ট্রাক চলাচল করে। সেতুটি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি স্থানীয়দের।
Leave a Reply